গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি | যেভাবে কলম বাঁধলে দ্রুত ফলন হয়

গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি এই পোস্টটিতে কিভাবে গাছের কলম করে অল্প সময়ে কিভাবে বেশি ফলন করা সম্ভব তা আজকের পোস্ট থেকে জানতে পারবেন। আশা করি আজকের পোস্ট থেকে অনেক উপকৃত হবেন।
গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি
গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি
এছাড়াও এই কলম বা কাটিং করার মাধ্যমে আপনি কিভাবে চারা উৎপাদন করতে পারবেন তা নিয়েও বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়েছে। গাছের কলম বা কাটিং করার সঠিক পদ্ধতি গুলো আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান

গাছের কলম (কাটিং) করার উপকারিতা

গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি যেমন অনেকেই খুঁজেন তেমনি অনেকেই জানেন না, কলম বা কাটিং কি ? গাছের কলম বা কাটিং করার উপকারিতা কি? আপনারা জেনে খুব অবাক হবেন গাছের কলম বা কাটিং করার বেশ কয়েকটি উপকারিতা রয়েছে। গাছের কলম বা কাটিং হলো ফলন পাওয়ার দ্রুত এবং সহজ মাধ্যম। গাছের কলম বা কাটিং করার উপকারিতা হলো:-
  • এক গাছে একাধিক ধরনের ফুল বা ফলের ফলন পাওয়া সম্ভব।
  • দ্রুত ফলন পাওয়া যায়।
  • এ থেকে চারা তৈরি করার সহজ হয়।
  • এক গাছে একাধিক ফলনের ফলে গাছের জায়গা কম লাগে।

গাছের শক্ত শাখা কাটিং করে বেশি ফলন

আম গাছ, কাঁঠাল গাছ, বরই গাছ, পেয়ারা গাছ সহ ইত্যাদি গাছের ক্ষেত্রে ৬ থেকে ১২ মাস বয়সের আঙ্গুলের ন্যায় মোটা ডাল নির্বাচন করতে হবে। এসব গাছের ডালের ক্ষেত্রে নরম ডাল এর চেয়ে শক্ত ডালের চারা উৎপাদন ভালো হয়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন বেছে নেওয়া কান্ড বা ডালটি ছত্রাক আক্রান্ত না হয়। ফলে জৈব সারের সংস্পর্শে আসা মাত্র এটি নষ্ট হয়ে যাবে।

উদ্ভিদের শক্ত শাখা কাটিং করে বেশি ফলন

গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতির মধ্যে একটি হল আধা শক্ত শাখা কাটিং করে নেওয়া। আধা শক্ত শাখা বলতে গাছের মাঝারে বয়সের শাখা কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ গাছের শাখাটির বয়স তিন থেকে চার সপ্তাহ। এসব কান্ড বেশিরভাগ পাবেন গাছের মাঝখানের অংশে। কেননা এখানে গাছের পুষ্টি সরবরাহ প্রতিনিয়ত চলতেই থাকে। তবে এই কান্ড কাটিং করে খুব সুক্ষভাবে কলম বাধতে হবে। 
আধা শক্ত শাখা কাটিং পদ্ধতির মধ্যে ড্রাগন ফল, গোলাপ গাছ, শিউলি গাছ, হাসনাহেনা, বড়ই গাছ, আম গাছ ও কাঁঠাল গাছ সহ ইত্যাদি গাছের কলম খুব দ্রুতই করা সম্ভব। আধা শক্ত শাখা কাটিং করে কৃষকরা খুব দ্রুত ফলন করতে সম্ভব হয়েছে। যা কম সময়ে দ্রুত ফলন করাতে পারে। তাই আপনারা এভাবে গাছের কলম বাধলে খুবই দ্রুত ফলন পাবেন ইনশাআল্লাহ।

গাছের কচি শাখা কাটিং করে বেশি ফলন

কচি শাখা কাটিং করে কলম বাধা গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম একটি। কচি শাখা বলতে সদ্য জন্মানো নতুন ডাল। যা গাছের শীর্ষে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো যে কচি পাতায় ফাঙ্গাস বা ছত্রাক আক্রান্ত করতে পারে না। বেশিরভাগ ডালগুলো বিশুদ্ধ হয়ে থাকে। তবে ডালগুলো নরম হয় খুব পরিচর্যা করতে হয়।

গাছের কোমল শাখা কাটিং করার উপায়

আমরা যেভাবে কলম বাঁধলে দ্রুত ফলন পাবো তার মধ্যে একটি হলো কোমল শাখা কাটিং করার মাধ্যমে কলম বাধাই করা। এতে কাণ্ড নির্বাচন করার ঝামেলা থাকে না। যেমন ড্রাগন ফল গাছ, আঙ্গুর গাছ, পান গাছ, পটল গাছ সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। তবে কান্ড কাটার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বিশেষ করে এটি সবজি চাষে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়। এবং একটি গাছ থেকে অনেক চারা উৎপাদন করা সম্ভব নয়। 
গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি

গাছের চারা তৈরির পদ্ধতি

গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি এই  ভিতরে চারা তৈরি করা অনেক ভালো। চারা তৈরির পদ্ধতির প্রথম ধাপ হলো বীজ নির্বাচন করা। আমরা যে গাছের বীজ রোপন করবো সেই গাছের বিজে যেন পোকামাকড় আক্রমণ এবং করা না থাকে এমন বিজ নির্বাচন করতে হবে। এর পরে ওর পর জায়গাতে বিজ রোপন করতে হবে এবং ঠিকমতো পরিচর্যা করতে রুন।

গাছের পত্রকুঁড়ি কাটিং করার উপায়

গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি এর মধ্যে অন্যতম পদ্ধতি হলো পত্রকুঁড়ি কাটিং করে চারা উৎপাদন। যেভাবে কলম বাঁধলে দ্রুত ফলন হয় তা হলো গাছের পত্রকুড়ি কাটিং করার কিছু সঠিক নিয়ম অবলম্বন না করলে হবে না। কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলার থেকে পাতা কাটিং করার মাধ্যমেও গাছ উৎপাদন করা যায় যেমনঃ পাথরকুচি, মিষ্টি আলু, ফনী ফনিমনসা ইত্যাদি। 

এই পদ্ধতিতে গাছের পাতা বা পাতার বিভিন্ন অংশ যেমনঃ পত্রফলক, বোটা সহ পাতার প্রভৃতি মাতৃগাছ হতে আলাদা করে নতুন চারা উৎপাদনে পাতা কাটিং বলে। এই পদ্ধতিতে যে গাছের পাতা থেকে গাছ উৎপাদন করবো সেই পাতায় যেন পোকামাকড় বা বিভিন্ন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত না থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই পদ্ধতিতে পাতা থেকে ৭-১০ দিনের ভিতরে গাছের চারা উৎপাদন করা সম্ভব।

গাছের মূল থেকে কাটিং করার উপায়


গাছের কলম করা পদ্ধতি এর ভিতরে বহুল প্রচলিত হলো মূল কাটিং করে চারা উৎপাদন করা। এই পদ্ধতিতে গাছের মূল মাতৃ গাছ থেকে আলাদা করে চারা উৎপাদন কে শিকড় বা মূল কাটিং বলে। এই পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের সঠিক সময় হলো বর্ষাকাল, কারণ এই সময় গাছের শিকড়ে যথেষ্ট পরিমাণের খাদ্য মজুদ থাকে। ফলে এই সময় কাটিং করে চারা উৎপাদনের সফলতার হার বেড়ে যায়। এই পদ্ধতিতে বাগান বিলাস, বেল, এলামন্ডা ইত্যাদি গাছের চারা উৎপাদন করা সম্ভব।

যেসব গাছের কাটিং বা কলম করে দ্রুত ফলন পাওয়া যায়

গাছের কলম করার সহজ পদ্ধতি এই পোস্টটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কিভাবে দ্রুত ফলন পাওয়া যায়। বিভিন্ন গাছ রয়েছে যা কাটিং করার পরের মৌসুমেই ফলন দিয়ে থাকে। শুধু দরকার পর্যাপ্ত পরিচর্যা যার ফলে খুব দ্রুত ফলন হয়। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য গাছ রয়েছে সেগুলো হলো:-
  • আম গাছ 
  • লিচু গাছ 
  • কাঠাল গাছ 
  • শিউলি ফুলের গাছ 
  • লেবু গাছ 
  • গোলাপ গাছ 
  • রজনীগন্ধা গাছ 
  • ড্রাগন ফল গাছ 
  • আঙুর ফল গাছ 
  • পটল গাছ 
  • গড় আলুর গাছ
এসব গাছ ব্যতীত আরও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।  বাংলাদেশের জলবায়ু অনুযায়ী উল্লেখিত গাছগুলো বেশ দ্রুত ফলন দিয়ে থাকে। কাটিং করার আদর্শ সময় হলো জুন থেকে আগস্ট মাস। যদি সময় মত কলম বা কাটিং লাগানো সম্ভব হয় এবং সঠিক যত্ন নেয়া হয় তবে পরের মৌসুমী এর খুব ভালো একটা ফলন পাওয়ার আশা করতে পারবেন।

শেষ কথা 

গাছের কলম করার সহজ উপায় এর মধ্যে বিভিন্ন ছোটখাটো বিষয় রয়েছে। আপনার অগ্রাহ্যতার কারণে ফসলের ফলন বাড়ানোর চেয়ে কমিয়ে ফেলে। তাই সেদিকটা বিবেচনায় রেখে আমরা আপনাদের জন্য আজকের পোস্টে লিখেছি। একটি গাছে একাধিক জাত বা ধরনের ফসল ফলানো সম্ভব। ফলন যে কম হবে তা নয় তুলনামূলকভাবে দেখতে গেলে কলম বা কাটিং করা ডালে সবচেয়ে বেশি ফুল বা ফল ধরে থাকে।
গাছের কলম করার সহজ উপায় বা যেভাবে কলম বা কাটিং বাঁধলে দ্রুত ফলন পাওয়া সম্ভব আজকের এই পোস্টটিতে আমরা কাটিং করার সহজ এবং কার্যকরী উপায় গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশা করি আজকের পোস্টটি পরে আপনারা খুবই উপকৃত হয়েছেন। পরবর্তী পোস্ট নিয়ে আমরা আবার হাজির হব আপনাদের সামনে। আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের কেউ জানার সুযোগ করে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্ক্রোলিং ষ্টেশন ২৪-এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url